করোনাভাইরাস মানুষের শরীরে যেসব ক্ষতি করে তার একটি হচ্ছে অনেকেরই রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।

একজন সুস্থ ব্যক্তির রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা থাকা উচিৎ ৯০ থেকে ১০০ শতাংশ।

অক্সিজেনের মাত্রা খুব সহজে পরিমাপ করার জন্য এখন বহু মানুষের ঘরেই রয়েছে অক্সিমিটার।খবর বিবিসির।

কোভিডে আক্রান্ত ব্যক্তিদের প্রতিদিন নিয়মিত অক্সিমিটার দিয়ে অক্সিজেন পরিমাপ করার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।

অক্সিজেন ৯০ এর নিচে নেমে গেলেই সমস্যা শুরু হয়। মাত্রা বেশি কমে গেলে রোগীকে ন্যাজাল ক্যানোলা দিয়ে অক্সিজেন দেবার দরকার পড়ে।

কিন্তু দরকারের সময় যদি ঘরে অক্সিজেন না থাকে তখন রোগী কিছুটা হলেও শারীরিকভাবে স্বস্তি পেতে পারেন এরকম কয়েকটি সহজ টিপস দিয়েছেন জাতীয় বক্ষব্যাধি ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সিনিয়র চিকিৎসক ড. কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর।

রক্তে অক্সিজেন কমে গেলে যা ঘটে-

রক্তে অক্সিজেন কমে গেছে কিনা তা অক্সিমিটার ছাড়াও বোঝার উপায় আছে।

যেমন মাথা ঝিমঝিম করতে পারে, শরীর দুর্বল লাগতে পারে, শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। অনেকেই অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন।

রক্তে অক্সিজেন সঠিক মাত্রার চেয়ে কমে গেলে মস্তিষ্কেও অক্সিজেনের ঘাটতি হয় – যা খুবই বিপজ্জনক।

শ্বাস নিতে সমস্যা এবং মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতি সবচেয়ে বেশি দু:শ্চিন্তার বিষয়।

আঁটসাঁট পোশাকে এমনিতেই শ্বাস নিতে অনেকের সমস্যা হয়। বুক ভরে শ্বাস নেয়া যায়না কারণ এমন পোশাকে ফুসফুসের পেশী প্রসারিত হতে বাধাগ্রস্ত হয়।

আর যদি এমনিতেই শরীরে অক্সিজেন কম থাকে- তাহলে সাধারণ পোশাকও কষ্ট দিতে পারে।

কোভিড রোগীর শরীরে অক্সিজেন কমে গেলে শুরুতেই পরনের পোশাক ঢিলা করে দিন।

টাইট কিছু পরনে থাকলে সেটি খুলে দিন। অন্তর্বাস, প্যান্ট এরকম পোশাক খুলে ফেলুন। মুখের মাস্কও খুলে দিন কারণ মাস্কের কারণেও শ্বাসকষ্ট আরও বেড়ে যেতে পারে।

রোগীকে বিছানায় উপুড় করে শুইয়ে দিন। বুকের উপর শুয়ে ধীরে ধীরে লম্বা শ্বাস নেয়ার চেষ্টা করতে হবে।

তাতে উপকার পাওয়া যায় কেননা ফুসফুসের একটি বড় অংশ মানুষের শরীরের পিঠের দিকে অবস্থিত।

উপুড় হয়ে শোয়ার ফলে ফুসফুসের পিঠের দিকের অংশ সহজে অক্সিজেন পায়। এতে কিছুটা উপকার পেতে পারেন করোনা রোগী।

ফুসফুস সুস্থ রাখতে ইদানীং চিকিৎসকেরা সবাইকে ফুসফুসের ব্যায়াম করতে পরামর্শ দিচ্ছেন।

সুস্থ ব্যক্তিদেরও এই পরামর্শ দেয়া হচ্ছে কেননা করোনাভাইরাস ফুসফুসকে আক্রান্ত করে। কোভিডে আক্রান্ত রোগীরাও শ্বাসকষ্ট হলে শ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন।

শ্বাসকষ্ট হলে আশপাশ থেকে মানুষজনকে সরিয়ে দিন। মানুষের ভিড়ে ঘরে অক্সিজেন কমে গিয়ে কার্বন ডাইঅক্সাইড বেড়ে যায়। ঘরের দরজা জানালা খুলে দিন।

এই টিপসগুলো সাময়িকভাবে স্বস্তি দেবে।

তবে এগুলো তাদের জন্যই – যাদের হালকা সমস্যা। যদি পরিস্থিতি খারাপ হয় তাহলে অক্সিজেন দেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই। সূত্র : যুগান্তর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *