করোনা সংক্রমণ রোধে ঈদুল আজহার পর শুরু হওয়া কঠোরতম বিধিনিষেধের তৃতীয় দিনের সকাল থেকেই রাজধানীর সড়কে রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে।
একই সঙ্গে ‘জরুরি’ প্রয়োজনে ঘরের বাইরে আসা লোকজনের সংখ্যাও গত দুই দিনের তুলনায় আজ বেশি লক্ষ করা গেছে।
সাপ্তাহিক কর্মদিবসের প্রথম দিন আজ রোববার সকালে উত্তরা, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী, আগারগাঁও, মিরপুর, মোহাম্মদপুর, ফার্মগেট, গুলিস্তান, মতিঝিল, পল্টনসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার সড়কে রিকশা ও ব্যক্তিগত গাড়ির চাপ দেখা গেছে।
বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে রাজধানীর সড়কগুলোতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টহল দিচ্ছে। তারা চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ি থামিয়ে বাইরে আসার কারণ জানতে চাইছে। ঢাকা জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রমও অব্যাহত আছে।
পুলিশের পাশাপাশি রাজধানীতে সেনাবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যরা বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তৎপর রয়েছেন।
ট্রাফিক মতিঝিল জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার তারেক আহমেদ প্রথম আলোক বলেন, মতিঝিলে অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কর্তৃপক্ষের আদেশ অনুযায়ী অনেক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আজ খোলা রয়েছে। সপ্তাহের শুরুর দিন হওয়ায় সকাল থেকেই এই এলাকার সড়কে যানবাহনের উপস্থিতি বেশি লক্ষ করা গেছে।
তারেক আহমেদ জানান, তাঁরা বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসিয়ে বিধিনিষেধ কার্যকরে তৎপর রয়েছেন। কোনো যানবাহনের আরোহীরা বাইরে আসার সন্তোষজনক উত্তর না দিতে পারলে তাঁরা তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
বিধিনিষেধের মধ্যে ঢাকা থেকে বাইরে যাওয়া যানবাহনের সংখ্যা তেমন নেই বলে জানান পুলিশের দারুস সালাম জোনের সহকারী কমিশনার ইত্তেখাইরুল ইসলাম। তিনি বলেন, গাবতলী থেকে ঢাকায় প্রবেশ ও বের হওয়ার দুই দিকেই চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ঢাকায় প্রবেশের দিকে যানবাহনের কিছুটা চাপ রয়েছে। লোকজনও আসছেন। তবে বেশির ভাগই জরুরি প্রয়োজন বা যৌক্তিক কারণ দেখাচ্ছেন।
ট্রাফিক পুলিশের ওয়ারী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার গোবিন্দ চন্দ্র পাল বলেন, সকালের দিকে তাঁর আওতাধীন এলাকায় ব্যক্তিগত যানবাহন বেশি ছিল। তবে দুপুর ১২টার দিকে যানবাহনের তেমন চাপ দেখা যায়নি।
ওয়ারী জোনের চারটি প্রধান পয়েন্ট—পোস্তগোলা, মুন্সিখোলা, সাইনবোর্ডের কুয়া মসজিদ ও সুলতানা কামাল ব্রিজের গোড়ায় সড়কের দুই দিকেই ট্রাফিক পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে বলে জানান গোবিন্দ চন্দ্র পাল।
করোনা সংক্রমণ কমাতে ১ থেকে ৭ জুলাই কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহার কারণে ১৫ থেকে ২২ জুলাই পর্যন্ত কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল হয়। ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার।
বিভিন্ন অজুহাতে ঘর থেকে বের হওয়ায় গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) ৩৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ডিএমপির ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৩৭ জনকে ৯৫ হাজার ২৩০ টাকা জরিমানা করেছেন। আর র্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ২১২ জনকে ১ লাখ ৯১ হাজার ৪৭০ টাকা জরিমানা করেছে।(প্রথম আলো)